Panacea Pharmacy & Medic

ডায়াবেটিকস  জটিলতা সমুহ

ডায়াবেটিকস  জটিলতা সমুহ

আজকের আমি ডায়াবেটিকস রোগের জটিলতা ও এঁর ভয়াবহ দিক নিয়ে আলোচনা করবো । ডায়াবেটিকস রোগ কি তা আপনারা আগের পোষ্টে জেনেছেন। ডায়াবেটিকস রোগীর রক্তে শরর্করা বা গ্লোকোজের পরিমান যত বেশি হবে শরীরে বিভিন্ন জটিলতার হার ও তার তীব্রতা ততো বাড়তে থাকবে। জটিলতাগুলো আপনার শরীরে বিভিন্ন অংগহানী করে আপনার মৃত্যুর কারন পর্যন্ত হতে পারে। তাই রক্তের শর্করা বা ডায়াবেটিকসকে নিয়ন্ত্রনে রাখা খুবই গুরুত্তপূর্ন।

এক নজরে ডায়াবেটিকস  রোগের জটিলতা সমুহ

১।পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি

২।নেফ্রোপ্যাথি

৩। রেটিনোপ্যাথি

৪। হার্টের বিভিন্ন রোগ যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইল, ষ্ট্রোক প্রভৃতি

এছাড়াও মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন ।

এখন আসুন বোঝার চেষ্টা করি পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি কি ?

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হচ্ছে আপনার শরীরের দূরবর্তী অংশে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া।  আপনার রক্তে প্রয়োজনের চেয়ে  অতিরিক্ত শর্করা থাকলে তা রক্ত ও তার সাথে অন্যান্য নিউট্রেশন চলাচল বাধা প্রদান করে। এতে দুরবর্তী কোষে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এই কারনে আপনার হাতের বা পায়ের নখ, আংগুল, দুই আংগুলের মধ্যেকার ফাকা যায়গায় ঘা হতে দেখা যায়।  আবার কোন কারনে আংগুল বা নখ মারা যায় বা পচন ধরে, গংলিন হতে দেখা যায় আবার মড়া চামড়াও দেখা যায়, সময় মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে এবং ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রন না করলে আপনার আংগুল বা যেকোনো অংগ কেটে ফেলতে হতে পারে।

ডায়াবেটিকস জটিলতা সমুহ
ঘা হওয়া

এছাড়াও আপনার শরীরের কোথাও আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ঘা হলে তা সারতে অনেক সময় লাগে আবার ঐ যায়গায় পচন ও ধরতে পারে, শরীরের তক ফেকাসে রঙ ধারন করতে পারে।  এছাড়াও পুরুষ ডায়াবেটিকস রোগীদের একটা বড় সমস্যা হল পুরুষাঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা । ডায়াবেটিকস রোগীদের পুরুষাঙ্গের সঠিক উত্থান বাধাগ্রস্থ হয় ।  এইসব জটিলতা থেকে নিরাপদ থাকতে হলে কঠোরভাবে ডায়াবেটীকস নিয়ন্ত্রন করতে হবে।

আপনার দাতের মাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে দাত নড়বড়ে করতে পারে আবার পড়ে ও যেতে পারে। মাঝে মাঝে দাতের গোড়া দিয়ে রক্ত ঝড়তে পারে।

দাতের মাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত
দাতের মাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত

 এখন আসুন নেফ্রোপ্যাথি সম্পর্কে জানা যাক

নেফ্রন মানে হচ্ছে কিডনির গাঠনিক ও কার্যকরী কোষ। ডায়াবেটিকসের কারনে কিডনির এসব কোষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে GFR কমিয়ে দেয়, কিডনি দিয়ে শর্করা ও প্রোটিন নিসরন বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও রক্তে বিভিন্ন ইলেক্ট্রোলাইটের অসামাঞ্জস্যতা তৈরি করে, যার কারনে উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায়। উচ রক্তচাপের কারনে মস্তিষ্কে চাপ পড়ে। ডায়াবেটিকসের কারনে ইস্কেমিক ও হেমরহেজ দুই ধরনের স্ট্রোকই দেখা যায়। আবার হৃদপিন্ডের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে হার্ট ফেইল ও করতে পারেন।

আপনার কিডনিতে সমস্যা হলে বা কিডনির ছাকন কমে গেলে তা আপনার হার্টে প্রভাব ফেলে, হার্টের কাজ করার হার বেড়ে যায় । আবার একইভাবে উচ্চ রক্ত চাপ হার্টের মাধ্যমে ঘটে হার্টে প্রভাব সৃষ্টি করে যা কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। অপরদিকে হার্ট ও কিডনির সমস্যার কারনে মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্থ হয় যা পরবর্তিতে শরীরের বিভিন্ন অংশে সমস্যা তৈরি করে ।

 

আপনার শরীরের কিডনি, হার্ট, মস্তিষ্ক সবগুলই একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত একটির সমস্যা হলে তা অপরটিকে প্রভাবিত করে।

Kedney damage
কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া

আবার একইভাবে আপনি যদি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন খাবার খান যেমন- ফাস্ট ফুড বা জাংক ফুড জাতীয় খবার। এগুলো উচ্চ ক্যলরি সমৃদ্ধ খাবার, এই ক্যলরির পুরোটা আপনার শরীর ব্যবহার করতে পারে না এতে অতিরিক্ত ক্যালরি আপনার শরীরে ফ্যাট আকারে সঞিত হতে থাকে। এতে করে আপনি স্থুলু বা মোটা হতে থাকেন যাতে করে তা আপনার হার্টে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে থাকে রক্ত সঞালনের জন্য। যা পরোক্ষভাবে কিডনিতে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ করে। আবার যারা ডায়াবেটিকস রোগী তাদের জন্য এই অতিরিক্ত ক্যালরি মৃত্যু সরূপ।

এবার আসুন জানা যাক রেটিনোপ্যাথি সম্পর্কে

রেটিনোপ্যাথি মানে হচ্ছে চোখের দৃষ্টি জনিত সমস্যা। ডায়াবেটিকস রোগীর রক্তে আতিরিক্ত শর্করা থাকার কারনে রেটিনার কোষগুলোও একইভাবে  নিউট্রেশন সাপ্লাই থেকে বঞিত হয়। তাদের নিজেদের মধ্যেও শক্তি উতপন্ন বাধাগ্রস্থ হয়। আবার উচ্চ রক্তচাপ ও রেটিনার কোষগুলোতে প্রভাব বিস্তার করে এতে করে কোষগুলো ভিষনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় যাতে একজন ডায়াবেটিকস রোগী দৃষ্টি হীনতায় ভুগেন, চোখে কম দেখেন । ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রন না করলে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে কোন এক সময় রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।

retinopathy
retinopathy

ডায়াবেটিকস রোগ নিয়ন্ত্রনে রেখে সুস্থ থাকার জন্য ডায়াবেটিকসের নির্দেশনামুলোক সবগুলো ভিডিও দেখুন এবং মেনে চলুন সুস্থ থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *