Panacea Pharmacy & Medic

ডায়াবেটিকস রোগ কি, কত প্রকার ও কি কি ??

ডায়াবেটিকস রোগ

আমি আজকে ডায়াবেটিকস রোগ সম্পর্কে, এঁর প্রকারভেদ, এর ভয়াবহতা ও রোগ নির্নয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। আমরা সবাই মুটামুটিভাবে ডায়াবেটিকস রোগ সম্পর্কে পরিচিত। আমাদের প্রত্যেক পরিবার বা আত্তীয় সজন বা আশে পাশে একজন না একজন ডায়াবেটিকস রোগি আছেই। উপমহাদেশে ডায়াবেটিকস রোগীর সংখা দিনকে দিন যেভাবে বাড়তেছে তা একটি দুশ্চিন্তার বিষয় বটে। ডায়াবেটিকস রোগের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট বয়সের প্রয়োজন হয় না। যেকোন বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ডায়াবেটিকস একটি ভয়াবহ রোগ, আপনি  যদি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিতসা না করেন তবে তা  আপনার অনেক রোগের কারন হতে পারে যা পরবর্তিতে মৃত্যুর কারনও হতে পারে।

ডায়াবেটিকস রোগ

বাংলাদেশের সাস্থবিভাগ ও ডায়াবেটিকস সমিতি দুহাজার বাইশ সালে মফসল এলাকাতে আট উপজেলার একহাজার তেইশ জনের উপর এক জরিপ পরিচালনা করেন, এতে দেখা যায় গ্রামের  ১৪% মানুষ ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত চার আগেও যা ছিলো ৭% মাত্র। এই রিপোর্টটি খুবই চিন্তার বিষয়।

ডায়াবেটিকস রোগের ভয়াভহতা সংক্ষেপে বললে যা আপনার শরীরের দূরবর্তী অংশে রক্ত চলাচল কমে যায় রক্তে শর্করা বেশি থাকায় দূরবর্তী অংশে যেমন নখ বা আঙ্গুল বা আঙ্গুলের ফাকে ঘা হতে পারে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিতসা না করলে অংগহানি ও হতে পারে।

ডায়াবেটিকস রোগে আপনার কিডনি, হার্ট ও মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করে, যেমন কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া সৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি ।

এছাড়াও আপনার দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে এমনকি কোন এক সময় আপনি অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।

এখন আসুন জানা যাক ডায়াবেটিকস রোগ কি ?

মানুষের জৈবিক কাজ পরিচালনার জন্য শক্তির প্রয়োজন খাদ্য হতে শর্করা উতপন্ন হয়ে কোষের ভিতরে এই শক্তি উতপন্ন করে।অগ্নাশয় হতে এই ইনসুলিন উতপন্ন হয়ে শর্করাকে কোষে প্রবেশ করিয়ে শক্তি উতপন্ন করে এবং অতিরিক্ত শর্করা লিভারে সঞ্চয় করে। যদি কোন কারনে রক্তে প্রয়োজনের অধিক শর্করা থাকে তবে তখন ডায়াবেটিকস আছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

ডায়াবেটিকস সাধারনত তিন প্রকার

১। টাইপ ১ ডায়াবেটিকস

২। টাইপ ২ ডায়াবেটিকস

৩। গর্ভকালীন ডায়াবেটিকস

টাইপ ডায়াবেটিকস

টাইপ ১ ডায়াবেটিকস হচ্ছে যখন কোন কারনে আপনার অগ্নাশয় ইনসুলিন তৈরিতে ব্যর্থ হয় বা প্রয়োজনের সমপরিমান ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। এটা কারো জন্মগতভাবে হতে পারে অথবা অন্য কোন কারনে যেমন অটোইমোইন প্রক্রিয়ায় ইনসুলিন তৈরির কোষগুলো ধংসপ্রাপ্ত হয় যা পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। অটোইমোইন হতে পারে বি সেল, ট সেল, লেম্ফসাইট, ইন্টারলিঊকিন এক বা প্রভৃতি সাইটোকাইনের মাধ্যমে।

সাধারনত টাইপ ১ ডায়াবেটিকস রোগীর জন্য ইনসুলিন প্রয়োগ হছে এখনো পর্যন্ত একমাত্র চিকিতসা।

ডায়াবেটিকস রোগ

টাইপ ডায়াবেটিকস কি ???

টাইপ টু ডায়াবেটিকস হচ্ছে আপনার শরীরে অগ্নাশয় কোষ পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে কিন্তু কোষগুলো এই ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না, এঁর জন্য পর্যাপ্ত শর্করা ব্যবহার হয় না এবং পর্যাপ্ত শক্তি ও উতপন্ন হয় না । শর্করাগুলো তখন রক্তে ঘুড়াঘুড়ি করে এবং ডায়াবেটিকস রোগের লক্ষন দেখা দেয়। কোষগুলো তখন ইনসুলিন ব্লকড হয়ে থাকে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিকস

গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তন আসে। এই হরমোনাল পরিবর্তনে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, এতে দুশ্চিন্তা না করে প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন বা ঔষধ সেবন না করেও ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রন করা যায়।

আপনার ডায়াবেটিকস রোগ তা আপনি কিভাবে বুজবেন ??

এঁর জন্য বায্যিক লক্ষন ও লেবরেটরীর পরীক্ষার প্রয়োজন পরবে।

বায্যিক লক্ষনগুলোর মধ্যে 

১।অতিরিক্ত ঘামা ,

২।হার্টবিট বেড়ে যাওয়া,

৩।ক্লান্তি অনুভব করা,

৪।মনযোগ নষ্ট হওয়া,

৫। অত্যাধিক ঘুম পাওয়া,

৬।অত্যাধিক খুধা পাওয়া,

ইত্যাদি

 

লেবরেটরীর পরীক্ষাগুলোর মধ্যে,

১। প্রশ্রাবে শর্করা ও প্রোটিন যাওয়া,

২। দুই নাম্বারে রক্তে ক্রিয়েটিনিন, বিভিন্ন ইলেক্ট্রোলাইট ও বাইকার্বোনেট বেড়ে যাওয়া।

৩। রক্তে Hbac1 6.5% এঁর বেশি হলে।

৪। খাবার আগে রক্তে শর্করা 7 mmol/L এঁর বেশি হলে।

৫। খাবার ১থেকে ১.৫ ঘন্টা পরে রক্তে 11 mmol/L এঁর বেশি হলে ।

আপনার ডায়াবেতিকস আছে বলে ধরে নেওয়া যায়।

এছাড়া বাসায়ই  গ্লাইকোমিটার ব্যবহার করে আপনি চার ও পাচ নাম্বার পরীক্ষা করে আপনার ডায়াবেটিক্সের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন।

ডায়াবেতিকস রোগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরবর্তি আর্টিকেলগুলো ও ভিডিওগুলো দেখুন। ভিডিও আপডেট পেতে চেনেলটি সাবস্ক্রাইব করুন, শেয়ার করে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিন, সুস্থ থাকুন ।

ধন্যবাদ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version